
মানুষের জীবনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যে চলা সেটি পথ চলা, কিন্তু অভিকর্ষজ ত্বরনের বীরুদ্ধে চলা মানে উপরে চলা বা উপরে ওঠা যাকে টেকনিক্যাল পরিভাষায় সিঁড়ি (স্টেয়ার) বলা যেতে পারে । যদিও সিঁড়ি-র ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও আছে, আবার যেখান থেকে শুরু হয়েছিল ঠিক সেই স্থানে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার স্থানে ফিরে আসাটাও এর অর্ন্তভুক্ত । ভাষাগত কিছু মারপ্যাচ থাকছে, একটু ভাবতে হবে, উত্তর নিজে থেকে-ই পাওয়া যাবে তবেই শিক্ষার সমাপয়েৎ হবে ।
ধরন : ( শুদ্ধ বাংলায় লিখতে বা পড়তে রুচিহীন হবে, তাই ইংরেজীতে বাংলা জাতীয় লিখলাম)।
১. ডগ লেগ.
২. বিফুরকেটেড.
৩. স্পাইরাল.
৪. সারকেল.
৫. সেমি- সার্কেল.
৬. কলাম.
৭. সিঙ্গেল বীম টাইপ. প্রভৃতি।
কিছু ইংরেজী টার্ম ও পরিমাপ ব্যাখ্যা করছি, যাতে আলোচনা বুঝতে সুবিধা হয় –
১. ট্রেড – আমরা সাধারনত যে স্থানের উপর পা দিয়ে উপরে উঠি। পরিমাপ – প্রস্থ ০.৮২ ফুটের কম রাখা যাবে না। দৈর্ঘ্য- ৩.০০ ফুটের কম করা যাবে না।
২. রাইজ -আমরা সাধারনত একটি ধাপের জন্য যে উচ্চতা অতিক্রম করি। পরিমাপ – ০.৫০ ফুটের অধীক করা যাবে না।
৩. ল্যান্ডিং – যে স্থানে সিঁড়ির গতিপথ পরিবর্তন হয়। পরিমাপ – প্রস্থ- ট্রেডের দৈর্ঘ্য, দৈর্ঘ্য – ট্রেডের দৈর্ঘ্যের দ্বিগুন ।
৪. রেলিং- হাতল । উচ্চতা – ২.৫ ফুট ।
৫. ওয়েস্ট স্ল্যাব – ট্রেড ও রাইজ যে ঢালাই অংশে অবস্থান করে। উচ্চতা – ০.৩৩ ফুটের কম হবে না।
বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী কিছু পরামর্শ :
১. সিড়িঁর অবস্থান বাস্তুর দক্ষিন, পশ্চিম অংশে করা বাধ্যতা মুলক । এতে পরিবারের আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি হয়।বিশেষ কারনে দক্ষিন-পুর্বের দক্ষিন দিক, উত্তর-পশ্চিমের পশ্চিম দিকে করা যেতে পারে। অবশিষ্ট উত্তর – ধনহানি, ঈশান – অপমৃত্যু, পুর্ব – নার্ভের সমস্যা,( প্রমানিত)।
২. ধাপ মানে রাইজটি আপনাকে গননায় রাখতে হবে । ধাপের গুনতি জোর সংখ্যার রাখতে হবে, যেমন – ২০,২২- প্রভৃতি। ছাঁদ ও ল্যান্ডিং-এর ধাপের গুনতি হিসাবে ধরা হবে না । এবিষয়ে দক্ষিন ভারত ও উত্তর ভারতের বাস্তুশাস্ত্রের ভিতর মতানৈক্য আছে।
৩. ল্যান্ডিং – এর নিচে রান্নাঘর,ঠাকুরঘর বা বাথরুম করা যাবে না। বাড়ির ক্ষেত্রে অনেকে জায়গার অভাবে সিঁড়ির নীচেও রান্না করে থাকেন৷ এটি কোনওভাবেই বাস্ত্তসম্মত নয়৷(কেন? শাস্ত্র ব্যাখ্যা – সিঁড়ির চাতালের নিচে শনিদেবের অবস্থান, তাই চাতালের নিচে রান্না নয়, আমার দেখা কিছু বাড়িতে এমন রান্নাঘরের জন্য সে বাড়ির রোগ,ভোগ অশান্তির শেষ নেই । আমার ব্যাখ্যা – সিঁড়ির চাতালের উচ্চতা মেঝে থেকে ৫-৫’৬” হয় প্লাস্টার বাদে,বা তার থেকে ৬” বাড়তে পারে, একজন সাধারন মানুষের গড় উচ্চতা ৫’৩.৫”, তাহলে যিনি রান্না করবেন তার থেকে চাতালের উচ্চতার ফারাক একবারেই নগন্য, উক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিনীর প্রথমে কোমরের, ঘারের, মেরুদন্ডের অসুখ হবে- এটা প্রমানিত, উপরের কলমে আলোচনা করেছি চাতালের উচ্চতা মেঝে থেকে কত রাখতে হবে, তাহলে রান্নার সময় জায়গার যে অপ্রতুলতা সেটি রান্নাতে রিফ্লেক্ট হবেই , এছাড়াও রান্নার সময় তরকারি,ডাল প্রভৃতি সোমবার দেবার সময় যে ঝাঁঝ উঠবে সেটি আপনার সকল বিচরনেই প্রবেশ করবে তাতে ঘরের সকলের শারিরীক সমস্যার সৃষ্টি সহ দেওয়ালের রং-এর উপর প্রভাব পরবে)
৪. মোচর হবে ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে । সাধারনত- রেলিং ডান হাতে ধরলেই হবে।
৫. ব্রহ্মস্থান ও মর্মস্থান হতে কখনও সিঁড়ি শুরু করা যাবে না । এতে অকস্মাত মৃত্যুযোগের সৃষ্টি হয়।
৬. গোলাকার সিঁড়ি বর্জনকরা-ই শুভ।
৭. দিকভেদে ও অবস্থান ভেদে সিঁড়ি ঘরের রং করা প্রয়োজন ।
৮. সিঁড়ির ব্যবহারে আপনার গৃহের টেলুরিক উর্জা বৃদ্ধি করুন – আপনি পারলে তবেই চেষ্টা করবেন বা চেষ্টা
করলে তবেই পারবেন –
ক. কাদের জন্য – ৬০ বছর অবধি পুরুষ মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য । গর্ভবতী মহিলা চেষ্টা করবেন না।
খ. দিনকাল – ৩০দিন।
গ. সময়কাল – প্রত্যহ পাঁজি অনুযায়ী সুর্য্যদ্বয়ের ৩০ মিনিট পুর্বে বা সুর্যাস্তের ৩০মিনিট পরে।
ঘ. কি করতে হবে – আপনার পা দ্বারা আপনার গৃহের সিঁড়ির ধাপ গুলি স্পর্শ করুন ।স্বাভাবিক ভাবেই –
প্রথমবার অভিকর্ষজ ত্বরনের বিরুদ্ধে ও অত:পর অভিকর্ষজ ত্বরনের অভিমুখে ।
প্রথম দিন ৩ বার । অত:পর আপনার সাধ্যমত ৩-এর গুনিতকহারে সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকুন।
সমগ্র বিষয়টি অনুধাবন করে শুরু করুন । নির্দিষ্ট সময়, সংখ্যা ও দিন অনুযায়ী না করলে বাস্তুদোষতো
কাটবেই না উপরন্তু গৃহে নেগেটিভ এর্নাজি সঞ্চার হবে । এই থেরাপি-টি আমি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ করে
দেখেছি এতে ১০০ শতাংশ সফলতা আপনি পাবেন-ই।
কিছু টেকনিক্যাল বিশ্লেষন –
১. শুরুর ধাপটি যার উপর অবস্থান করবে সেটিকে “টো-ওয়াল” বলা হয়, উক্ত স্থানে নির্দিষ্ট পরিমাপের ভীত করা বাধ্যতামুলক, বর্তমানে টো-ওয়ালের পরিবর্তে টাই বিমের প্রচলন হয়েছে। একটু দেখে নেওয়া প্রয়োজন, টাইবিমের প্রস্থ যেন ট্রেডের প্রস্থের কম না হয় । অধিকাংশ বাস্তুক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় যে প্রথম ও শেষ ধাপটির উচ্চতার কম বেশি হয়, সেজন্য খুব সাবধানে প্রথম ও শেষ ধাপটির পরিমাপ করা প্রযোজন ।( টাই বিমের ন্যুনতম পরিমাপ – ০.৮২ ০.৬৭ করা যেতে পারে) ।
২. ওয়েস্ট স্ল্যাব –এ রড বাঁধার সময় লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন যেন রডের বাঁধন উল্টো না হয়ে যায়, ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে রডের বাঁধন উল্টো হয়। মেন রড ন্যুনতম ১০এম এম নিচে করা যাবে না। ক্লীয়ার ২৫ এম,এম-এর কম রাখা যাবে না ।
৩. সিঁড়ির সাটারিং-এর ক্ষেত্রে দক্ষ মিস্ত্রী বাছাই করা প্রয়োজন, অন্যথায় সিড়িঁর উচ্চতার ক্ষেত্রে অসমতা বাস্তুক্ষেত্রে বাস্তুদোষের সৃষ্টি করবে।
৪. ল্যান্ডিং-এর ন্যুনতম ২.৫ ফুট উচ্চতা হইতে ওপেনিং রাখতে হবে, প্রস্থ ২.৫ ফুটের অধীক করা যাবে না।
৫. সিঁড়ির উত্তর দেওয়াল ০.৮২ ফুটের প্রস্থের করা বাধ্যতামুলক। দেওয়ালটি আপনি ডিসপ্লে ওয়াল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
কিছু ইলেকট্রিক্যাল বিশ্লেষন –
কনসিল ওয়্যারিং করলে কনস্ট্রাকশন দুর্বল হয়ে যায় তবুও বর্তমান প্রযন্মের দৃশ্যমান্যতা দুর্বলকে ঢেকে দিয়েছে । তাই বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন –
১. রাইজ লাইটের ক্ষেত্রে ওয়েস্টস্ল্যাব দিয়ে পাইপলাইন করা যেতে পারে।
যাই হোক চেষ্টা করলাম, আপনারা কতটা মানতে পারবেন সেটা সকলটাই আপনার ওপর । তবে মানলে আপনার ক্ষেত্রে শুখকর-ই হবে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।