
একটি সংগ্রহ উল্লেখ করছি- “যদি কারোর জন্ম কুন্ডলীতে লগ্নভাব থেকে চতুর্থভাবে বৃহস্পতি গ্রহ অবস্থান করে থাকে, তাহলে সেই বাড়ীতে সিংহাসনের উপর দেবতা প্রতিষ্ঠা করতে নেই,তাহলে আপনাদের ব্যক্তিগত জীবনে দুর্ভাগ্য নেমে আসতে পারে,এটা ভারতীয় বাস্তুশাস্ত্র মতে বাস্তুদোষ হিসেবে চিহ্নিত না হলেও ব্যক্তিগত জন্ম কুন্ডলী মতে এটা তাদের ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রে চরম বাস্তু দোষ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে, সেজন্য জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে যদি কারোর জন্ম কুন্ডলীতে লগ্নভাব থেকে চতুর্থভাবে বৃহস্পতি গ্রহ অবস্থান করে তাহলে তাদের বাড়ীতে ঠাকুর ঘরে, বাড়ীর ঠাকুর যেভাবেই রাখুন না কেন অন্তত সিংহাসনে স্থাপন করবেন না”। বিষয়টি যদি সঠিক হয় তাহলে ঠাকুর ঘরের বাস্তু বিঞ্জান অন্য রকম হবে । উল্লিখিত বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে কেউ একটু গাইড করবেন ?সকল পাঠকে আলোচনাতে আহ্বান করছি। নজর রাখবেন প্রতিটি কমেন্ট –এ । যে সকল ব্যক্তিবর্গকে আহ্বান জানাচ্ছি সকলেই উক্ত বিষয়ের উপর নক্ষত্রসম । আলোচনা শেষ হলে “ঠাকুর ঘরের বাস্তুকথা” লিখবো।
আপনাদের কাছে আমার আনুরোধ আমার লেখা পড়ুন, সংশোধন করুন, শুধু লিখছি বলেই লাইক নয়।
বাড়ীর শোবার ঘরকে কখনোই ঠাকুর ঘর করবেন না, বা ঠাকুর রাখবেন না। রাখলেও কিছু নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে।
শোবার ঘরে ঠাকুরের ক্যালেন্ডার রাখাও উচিত নয়।
আপনাদের বাড়ীর Toilet Room-এর পাশেও কখনোও ঠাকুর ঘর করবেন না।কারন এতে সেই পবিবারের পবিত্রতা ধীরে ধীরে কমে যায়।
ঠাকুর ঘর সাধারনত বাড়ীর উত্তর-পূর্ব কোণে (ঈষাণ কোণ) তৈরী করা সবথেকে শুভ।তবে উত্তর-পূর্ব কোণ (ঈষাণ কোণ) ছাড়াও বাড়ীর পূর্ব দিকে ঠাকুর ঘর তৈরী করা যেতে পারে।
আপনারা কখনোই ঘরের কিংবা বাড়ীর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে (নৈঋত কোণ) ঠাকুর ঘর করবেন না,এটা ভারতীয় বাস্তুশাস্ত্র মতে চরম অশুভ,এর প্রভাবে সেই বাড়ীতে পারিবারিক কিংবা পারিপার্শ্বিক কোনো কারনে পুলিশি ঝামেলা কিংবা আইনগত ঝামেলা চলে আসতে পারে।
ঠাকুর ঘরে পুজার জন্য ব্যবহৃত গঙ্গা জল সর্বদাই আপনারা গঙ্গায় জোয়ারের সময়ই নিয়ে আসবেন,কারন হিন্দুধর্ম অনুসারে যেকোনো ধর্মীয় পুজার সময় জোয়ারের সময়ের গঙ্গা জলই সেই পুজাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
অনেকেই ঠাকুর ঘর বাড়ীর ছাদে তৈরী করেন,কিন্তু এটা ভারতীয় বাস্তু শাস্ত্র মতে খুব অশুভ না হলেও,ছাদে ঠাকুর ঘর করা উচিত নয়,আমাদের হিন্দুধর্ম মতে ভগবান সর্বদা মানুষের সাথেই বসবাস করে,তাই ঠাকুর ঘর বাড়ীর ছাদে তৈরী করে ভগবানকে আমাদের কাছ থেকে সরিয়ে রাখা উচিত নয়,তাই আমাদের বসবাসের পাশেই ভগবানকে রাখা উচিত,তাই আমরা যেখানে থাকবো বাড়ীর সেই তলাতেই উত্তর-পূর্ব কোণে (ঈষাণ কোণ) ঠাকুর ঘর করা উচিত।
আপনারা কখনোই ঠাকুর ঘরে ঝুল জমতে দেবেন না,কারণ এটা অশুভ, এর জন্য পরিবারের কেউ কিংবা অন্য কেউ গুপ্ত শত্রুতা করতে পারে,তাই আপনারা যতটা পারবেন ঠাকুর ঘরের ঝুল সর্বদা পরিস্কার করার চেষ্টা করবেন।
ঠাকুর ঘরে একই দেবতার ছবি কিংবা মূর্তি একাধিক রাখা উচিত নয়,কারন তাতে পুজা করলেও সেই পূজার ফল কিছুই পাওয়া যায় না,তাই যেকোনো দেবতার ছবি একটা রাখাই শুভ।
আপনার আরাধ্য দেবতার প্রকার ভেদে ঘরের পরিমাপ করা প্রয়োজন।
ঘরের উচ্চতা ১০.৫ ফুট, গম্বুজার হলে উচ্চতার সঙ্গে আরো ৫.০০ ফুট করা যেতে পারে।
সাধারন রং- নীলাভ, সিলিং- সাদা, কিন্তু দেবতা ও জাতকের রাশি বা বাস্তুদোষ ভেদে রং-এর পরিবর্তন করতে হবে।
ছাদে বিম না রাখাই ভালো।
সাধারন দীপন প্রাবাল্য – ৪০ওয়াট এর কম যেন না হয়। প্রয়োজনে ঝিকিমিকি আলো দ্বারা শোভাবর্ধন করা যেতে পারে।
“সিংহাসনের ব্যবহার”- আমার মতামত ব্যক্ত করলাম, পিতা,মাতা হল আমাদের সবথেকে বড় ঠাকুর তার পর অন্যদেবতা। আমরা যে স্থানে বসে আরাধনা করবো তার থেকে আনুমানিক ০.৫০-১.০০ ফুট উঁচু উচ্চতার সিংহাসন-এ দেবতা প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে, এতে সাধারন চোখে মনুষ্য ও দেবতার আসন পার্থক্য করলেও সেই পার্থক্য যে কি বিশাল তার কোন পরিমান করা সম্ভব নয়। বৈঞ্জানিক ভাবে চোখের “লাইন অফ কলিমেশন” সঠিক রাখবার জন্য। অনেক দেবতার শয়ন, জাগরন, ভোগ- প্রভৃতি কিছু ক্রীয়া পালন করা হয় সে ক্ষেত্রে সিংহাসন ব্যবহার বাধ্যতামুলক।
আরো অনেক কিছু আছে যেগুলি আলোচনা বা চাহিদা ছাড়া সম্ভব নয়, আমার লেখা মাননীয় গোপাল ভট্টাচার্য্য মহাশয়ের “নক্ষত্র ও জ্যোতিষ” পত্রিকায় থাকছে, আপনারা সংগ্রহ করুন।
বাস্তু সর্ম্পকিত কোন অসুবিধা হলে আমি আছি তো। সমাধান হবেই।